Monday, 26 November 2012

ভিকারুন্নিছা কলেজের পর এবার নেত্রকোণার মদন আব্দুল আজিজ কলেজের শিক্ষকের কান্ড

------আলপনা বেগম
ঢাকার ভিকারুন্নিছা নুন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক পরিমল ধরের ঘটানো ঘটনার পুনরাবৃর্ত্তি ঘটেছে এবার নেত্রকোনায়ওজেলার ঐতিহ্যবাহী মদন আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের জনৈক ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ইংরেজী প্রভাষক মোঃ আজিজুল হককে মদন থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছেসোমবার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন
না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেনঅপর দিকে দুপুরে কলেজের গর্ভনিং বডির জরুরী সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্থ করা হয়েছে বলে বিশ্বস্থ একটি সূত্র জানায়এ নিয়ে এলাকায় চলছে টাকা লেনদেনের জোর-তোর কার্যক্রমশিক্ষক অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, মদন আব্দুল আজিজ ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কলেজের ইংরেজী প্রভাষক আজিজুল হকের নিকট প্রাইভেট পড়তো
গত ৮ নভেম্বর দুপুরে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ভূলবশত নতুন ক্রয় করা জোতার প্যাকেট ফেলে রেখে আসেবিকেলে শিক্ষকের বাসা থেকে জোতার প্যাকেট আনতে গেলে প্রভাষক আজিজুল হক ছাত্রীটিকে একা পেয়ে মুখে ওড়না বেধে ধর্ষন করেবিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করে ছাত্রীটি প্রতিকার দাবী করেকলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হক সামাজিক ভাবে বিষয়টি মীমাংসায় নেওয়ার জন্য মেয়েটির কাছে ৩/৪ দিনের সময় নিলে এই ফাকে গত শুক্রবার অভিযুক্ত শিক্ষক রুমা নামের অপর এক মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেঅধ্যক্ষের গাফিলতিতে অবশেষে অসহায় ছাত্রীটি পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ রাতেই বিয়ে বাড়িতে রওয়ানা দেনএ খবর পেয়ে লম্পট আজিজ বিয়ের শেষ আনুষ্ঠানিকতা শেষ না করেই বিয়ের পিরি ছেড়ে পালিয়ে যানঐ দিন রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়পরদিন মদন থানা পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত প্রভাষক আজিজুল হককে কলেজর সামনে থেকে গ্রেফতার করেএ নিয়ে মদন উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়
প্রতিবেশি মোঃ মমতাজ উদ্দিন খান বলেন, এই রকম চলতে থাকলে মেয়েদেরকে পড়াশুনা করানো যাবে নাআমার একটাই মেয়েতারও দুই মেয়েতাকে বলবো যদি মেয়েদেরকে পড়াইতে চাও তাইলে সাথে সাথে নিয়া যাইওশিক্ষকরা এমন হইলে তো আর পড়ানোর জায়গা থাকে নাকলেজের মানবিক বিভাগের তায়েব, রফিকুল ইসলাম বলেন স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লেই ইংরেজীতে ফেল করায়তাই গরীব ধনী সবাইকেই বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পড়তে হয়
এ ব্যাপারে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, গ্রেফতারকৃত প্রভাষককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছেএদিকে মেয়েটি যাতে সুষ্ঠু বিচার পায় সেজন্য মহিলা পরিষদ জেলা প্রেসকাবে সোমবার সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন
মহিলা পরিষদের নেত্রকোনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রেহানা সিদ্দিকী বলেন, ধর্ষকের পরিবার এখন বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য নতুন একটি নাটক সাজাচ্ছেপ্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষকের এক আত্মীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে মেয়েটির পরিবারকেএক পর্যায়ে আমরা শুনেছি ৫ লাখ টাকা দেয়া নেয়া হচ্ছেমেয়েটা এই টাকার খেলা নেলার মাঝখানে পরে গেছেতিনি সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সবাই মিলে সামাজিক ভাবে এগিয়ে আসুন আমরা মেয়েটিকে এই খেলার বিয়ে থেকে রক্ষা করি
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ জকির হোসেন খান জানান, এ বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না, আইনের মাধ্যমেই অপরাধির বিচার নিশ্চিত করা হবে

>>> আলপনা বেগম- সাংবাদিক, সময় টিভি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন।